এনআইডির অ্যাপ্লিক্যাশন বা আপনার এনআইডির একটি অ্যাপ্লিকেশান পেন্ডিং হলে করণীয়

এনআইডির পেন্ডিং অ্যাপ্লিক্যাশন বা আপনার একটি অ্যাপ্লিকেশান পেন্ডিং হলে করণীয়

আমাদের জাতীয় পরিচয়পত্র ভুল হওয়ার কারণে আমরা অপেন্ডিং নলাইনে আবেদন করার পর দীর্ঘদিন যাবত একটি লিখাই দেখতে পাই এমন “আপনার একটি অ্যাপ্লিকেশান পেন্ডিং রয়েছে” অর্থাৎ আমার আবেদনটি এপ্রুভ হচ্ছে না বা আমার জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন হচ্ছে না। এমনটা কেন হয়ে থাকে এবং কি এর সমধান এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিডিওটি শেষ পর্যন্ত দেখুন। ভিডিটি সম্পূর্ণ দেখলে আপনি নিজেই পাবেন এর সঠিক সমাধান। তার আগে আমাদের আধুনিক আইডি ফেসবুক পেজটি ফলো এবং আধুনিক আইটি ইউটিউভ চ্যানেলটি সাবস্কারাইভ করা অনুরোধ রইলো।

প্রথমেই জানবো দীর্ঘদিন কেন অ্যাপ্লিকেশান পেন্ডিং থাকে, এর অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কারণ গুলো হলোঃ

  • (১) ভুল আবেদন।
  • (২) প্রয়োজনীয় ডকোমেন্ট প্রধান না করা।
  • (৩) নির্বাচন অফিসার কতৃক চাহিত আরো সংযুক্তি প্রদান।
  • (৪) প্রতারণামূলক সংযুক্তি প্রদান করা।
  • (৫) সংযুক্তি পরিষ্কার না হওয়া।
  • (৬) ডিজিটাল জন্ম সনদ না দেয়া।

ভুল আবেদনঃ ভুল আবেদন বলতে কি বুঝায়? এই ভুলের বিভিন্ন ধরণ রয়েছে যেমনঃ আমি এক ডকোমেন্ট অপশন সিলেক্ট করে আরেকটা দিয়ে দিলাম। অর্থাৎ সিলেক্ট করলাম জন্ম নিবন্ধন কিন্তু সেখানে দিয়ে দিলাম সার্টিফিকেট। অথবা সার্টিফিকেট এর অপশন থাকার পরেও আমি অন্যান্য সিলেক্ট করলাম। তাহলে অ্যাপ্লিকেশান পেন্ডিং থাকবে।

প্রয়োজনীয় ডকোমেন্ট প্রধান না করাঃ সংশোধন এর আবেদন করার পূর্বে আমাদেরকে অবশ্যই জানতে হবে কোন সংশোধনের জন্য কোন ডকোমেন্ট দাখিল করতে হবে। আমার নামের বাবান যদি আংশিক ভুল থাকে যেমনঃ আমার নাম (মোঃ খলিলুর রহমান) কিন্তু আমার আইডি কার্ডে চলে আসছে (খলিলুর রহমান) অথবা  (মোঃ খলিলুর) এ জাতীয় সংশোধনের জন্য সাধারণত ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন এবং সার্টিফিকেট দিলেই এটি সংশোধন হয়ে যাবে। যদি সার্টিফিকেট নাও দেয়া হয় তবও এটি সংশোধন হয়ে যাবে। তবে আমার সার্ভারে যদি শিক্ষাগত যোগ্যতা ৮ম, মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক দিয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই সার্টিফিকেট প্রধান করতে হবে অন্যথায় মাসের পর মাস আমাদের অ্যাপ্লিকেশান পেন্ডিং থেকে যাবে।

অন্যদিকে আমার নাম (মোঃ খলিলুর রহমান) থেকে আমার ডাক নাম (মোঃ তাওহীদুর রহমান) দিতে চাই অথবা আমার জন্ম তারিখ সংশোধন করতে চাই তাহলে কিন্তু আমাদের এটি সংশোধন করতে অনেক ধরণের ডকোমেন্ট এর প্রয়োজন হবে। এখানে শুধু সার্টিফিকে বা জন্ম নিবন্ধন দিলে চলবে না। এর সাথে পারিবারিক সনদ বা মৃত্যু সনদ, চেয়াম্যান প্রত্যয়ন, ম্যাজিস্ট্রেট এফিডেভিট, পাসপোর্ট, ড্রাভিং লাইসেন্স ইত্যাদি সহ উপজেলা নির্বাচন অফিসার কতৃক তদন্ত প্রতিবেদন দিতে হবে অন্যথায় আবেদনটি পেন্ডিং থেকে যাবে। কোন সংশোধনে কি কি ডকোমেন্ট লাগবে এমন আরো একটি ভিডিও রয়েছে চাইলে সেটি দেখতে পারেন। ভিডিও ডেক্স্রিপশনে লিংক দেয়া থাকবে।

নির্বাচন অফিসার কতৃক চাহিত আরো সংযুক্তি প্রদানঃ যেমন ধরুন আপনি সংশোধনের আবেদন করেছেন, সংযুক্তি দিয়েছেন শুধু জন্ম নিবন্ধন। কিন্তু অনলাইন সার্ভারে আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা দেয়া আছে ৫ম, ৮ম, ৯ম কিংবা মাধ্যমিক পাশ তাহলে অবশ্যই আপনাকে সেই সমমান সার্টিফিকেট চাইবে। এখন বলতে পারেন আমি তো মাধ্যমিক পাশ না বা আমি হাতে কলমে শিক্ষিত তারা সেটা কিভাবে পেল? যখন আপনি ভোটার হয়েছেন তখন আপনাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল আপনি কি পাশ তখন আপনি যেটা বলেছেন তারা কিন্তু সেটাই অনলাইনে এন্ট্রি দিয়ে রেখেছিল। অন্যদিকে আপনি ভোটার হওয়ার সময় পাসপোর্ট কিংবা ড্রাইভিং লাইসেন্স দিয়েছিলেন সেটাও কিন্তু অনলাইনে রয়ে গেছে বিধায় সংশোধনের ক্ষত্রে নির্বাচন অফিসার সেটাও চাইতে পারে। আপনি যতোক্ষণ এগুলো না দিবেন ততোক্ষণ আপনার অ্যাপ্লিকেশান পেন্ডিং থেকে যাবে।

এখনে প্রশ্ন আসতে পারে, তারা এগুলো কিভাবে চাইবে বা আমি কিভাবে এটা জানবো? এটা জানানোর জন্য তারা আপনার আবেদিত নাম্বারে ম্যাসেস দিয়ে থাকে। ম্যাসেসটি আসে ১০৫ থেকে। আপনি ম্যাসেস না পেলে অবহেলার কারণে ম্যাসেসটি হারিয়ে ফেললে নির্বাচন কমিশনের নাম্বার ১০৫ এ কল দিয়ে বিস্তারিত জেনে নিতে পারবেন ।

প্রতারণামূলক সংযুক্তি প্রদান করাঃ সংশোধনের অ্যাপ্লিকেশান করার সময় কোন ডকোমেন্ট ফটোশপের মাধ্যমে তৈরী করে দিলে। যেমনঃ জন্ম নিবন্ধন ভুল আছে কিন্তু এটা আমি ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয় থেকে সংশোধন না করে ফটোশপের মাধ্যমে এডিটিং করে আবেদনের সময় দাখিল করলাম। এই ধরণের সংশোধনের অ্যাপ্লিকেশান পেন্ডিং থাকবে। এবং এক সময় এটি বাতিল করে দেয়া হবে।

সংযুক্তি পরিষ্কার না হওয়াঃ এনআইডি অ্যাপ্লিকেশান পেন্ডিং থাকার আরো একটি কারণ হতে পরে  অ্যাপ্লিকেশান করার সময় যে ডকোমেন্ট দাখিল করেছেন সেটা অস্পষ্ট কিংবে ঘোলা ফোনের ছবি দিয়ে দিয়েন। এমন হয়ে থাকলেও অ্যাপ্লিকেশান পেন্ডিং থাকার পরে বাতিল হয়ে যাবে।

ডিজিটাল জন্ম সনদ না দেয়াঃ এনআইডি কার্ডের প্রত্যেকটি আবেদনের সময় (ঠিকানা পরিবর্তন ও স্পাউস এর নাম পরিবর্তন ব্যাতিত) অবশ্যই জন্ম নিবন্ধনের কপি দিতে হবে। জন্ম সনদের কপি না দিলে অ্যাপ্লিকেশান পেন্ডিং থাকার পরে বাতিল হয়ে যাবে। তবে একেবারে ক্ষুদ্র সমস্য থাকলে সার্টিফিকেট দিয়েও সংশোধনে হয়ে যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *