উসমানীয় সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা কে আরতুগরুল গাজী নাকি প্রথম উসমান

খলিলুর কাদেরীঃ উসমানীয় সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা উসমান গাজী ধরে ১২৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও এর উত্থান হয়েছিল কিন্তু আরো অনেক আগে থেকেই। আর এর গোড়াপত্তন হয়েছিল আরতুগ্রুল গাজীর হাত ধরে। একটি স্বাধীন সাম্রাজ্যের স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন উসমানীয় সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা উসমান গাজীর পিতা আরতুগ্রুল গাজী। একটি সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করার জন্য যা যা করার দরকার তার সবই করেছিলেন আরতুগ্রুল গাজী। কিন্তু তার বয়স শেষ পর্যায়ে এসেও দেখে যেতে পারেনি একটি পূর্ণাঙ্গ সাম্রাজ্য।  ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১২৫১ সালে আরতুগরুল নাইসিয়ান শহর থেবাসিওন জয় করেন। পরবর্তীতে এর নতুন নামকরণ করা হয় সোগুত বা দেগুত গ্রাম এবং এটি তার সাময়িক রাজধানী হয়। উসমান গাজী এখানেই জন্মগ্রহণ করেছেন। পিতার আরতুগ্রুল গাজীর মৃত্যুর পর উসমান প্রধান বা বে হন।

পিতা আরতুগ্রুল গাজীর জয় করা জনপদ ছিল উসমান গাজীর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, অন্যদিকে উসমান গাজীর মাতা ছিল একজন সেলজুক শাহজাদী। এইদিক দিয়ে উসমান গাজী সেলজুক সুলতান প্রথম কায়কোবাদ এর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন। এর ফলে  সুলতান কায়কোবাদ তাকে আনাতোলিয়ায় বেয়লিক প্রতিষ্ঠা করা এবং পশ্চিমে বাইজেন্টাইনদের দিকে সীমানা বৃদ্ধির অনুমতি প্রদান করেছিলেন। এই সকল বিষয়গুলোই উসমান গাজীকে একটি সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে সহযোগীতা করে।

উসমান গাজীর দক্ষ্য নেতৃত্ব এবং দ্রুত কার্যকর বাহিনী হিসেবে গড়ে উঠা সৈন্য এবং এর ফলে একটি সাম্রাজ্য তৈরীর ভিত্তি স্থাপিত হয়। এরপর ১২৮১ থেকে ১২৮৯ পর্যন্ত উসমান অনেকগুলো যুদ্ধে অংশ নেন এরমধ্যে প্রধান ও সবচেয়ে আলোচিত যুদ্ধগুলো হলো, এরিমানিবেলির যুদ্ধ, কুলুচাহিসার অবরোধ এবং ডোমানিকের যুদ্ধ। রুম সালতানাতের অধীনস্থ বেইলিক বা উসমানীয় বেইলিকের অধীনে যুদ্ধ হয় ১২৮৯ সাল থেকে ১২৯৯ পর্যন্ত। এসব যুদ্ধের ফলাফলে ইনগোল জয় হয়। এরপর স্বাধীন উসমানীয় বেইলিকের অধীনে যুদ্ধ হয় ১২৯৯-১৩২৬ সাল পর্যন্ত। এসব যুদ্ধগুলো হলোঃবাফিয়াসের যুদ্ধ, ডিম্বোসের যুদ্ধ, সাকারিয়া অভিযান এবং বুরসা অবরোধ।

উসমান গাজী ২ জন স্ত্রী ও ৬ জন সন্তান ছিল। উসমান গাজীর ১ম পুত্র ১ম ওরহান পরবর্তীতে এই সাম্রাজ্যের হাল ধরেন। পরিশেষে বলা যায় উসমানীয় সাম্রাজ্যের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা উসমান গাজী হলেও এখানে তার পিতা আরতুগ্রুল গাজী ও মাতা সেলজুক শাহজাদী হালিমা হাতুনের অনেক ভূমিকা ছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *