নতুন ইউটুভার বন্ধুদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা ও টিপস

ইউটিউবে যারা নতুন তাদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা ও টিপসঃ

নতুন ইউটুভার যারা আছেন তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বভিন্ন গ্রুপে প্রায় সময় একটা কমন প্রশ্ন করে যেটা নিয়ে তেমন কেউ কথা বলে না তাই ভাবলাম এই বিষয়ে কিছু কথা বলা দরকার। এই প্রশ্নটা বেশি মানুষেই করে থাকেন যে, আমি অনেকগুলো ভিডিও কন্টেন্ট নিয়ে কাজ করছি কিন্তু আমার একদম ভিউ হচ্ছে না। অনেকে আবার প্রশ্ন করেন, “আমি মনিটাইজ পেয়েছি কিন্তু আমার ইনকাম কম, আমার সিপিসি কম, পেজ সিটিআর কম, দেশের বাইরে থেকে ভিউ আসে না ইত্যাদি।

এ বিষয়ে প্রথমেই আপনাকে যেটি বলবো, আপনি যদি মাসে আপনার চ্যানেলের জন্য মাসে ১০ টি ভিডিও কন্টেন্ট তৈরি করে থাকেন তাহলে বলবো ১০ কন্টেন্ট না দিয়ে আপনি ২ টা করার টার্গেট নিন অর্থাৎ ১০ টা কন্টেন্ট এ যে সময় দিচ্ছেন সেই সময় আপনি ২ টা তে দিন। আপনার কন্টেন্ট যতো ইউনিক এবং ভালো মানের হবে আপনার ভিডিও ততো ভাইরাল হবে। দেখা গেলো আপনি ১০ টা ভিডিও বানালেন কিন্তু একটাও ভাইরাল হলো না তখন আপনার ১০ টা ভিডিও বানানোরই কোন মূল্য রইলো না। আর যদি আপনি ২ টা ভিডিও বানিয়ে অন্তত একটা ভিডিও ভাইরাল করে ফেলতে পারেন তাহলে দেখা যাবে আপনার ১০ ভিডির থেকে ১ টা ভিডিওই আপনাকে সফলতার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। ভিডিও তৈরিতে সময়, শ্রম এবং ধৈর্যের বিকল্প কিছুই নেই।

ভিডিও ভাইরাল কিভাবে হবে?

প্রথমত আপনি ভিডিও মান ভালো করবেন, এরপর আপলোড করবেন, গণহারে লিংক শেয়ার করবেন না, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম গুলোর সব যায়গায় একদিনে লিংক শেয়ার দিবেন না, একদিন পর পর বা সকাল বিকাল ক্যাটাগরিতে লিংক দিবেন। এমন কাউকে ইনবক্সে লিংক দিবেন না যে আপনার ভিডিও শুধু ভিউ করেই চলে আসে। লক্ষ্য রাখবেন আপনার ভিডিওটা যেনো সে সবটুকু দেখে এবং পাশাপাশি আপনার ভিডিওতে রিয়েক্ট অথবা কমেন্ট করে। এরপরে আপনার ভিডিওতে এমন টাইটেল দিবেন যেটা দিয়ে মানুষ সার্চ করে। ট্যাগ দিবেন ৫/৬ টা, চাইলে বাকী ট্যাগ গুলো ট্যাগ বক্সে না দিয়ে ভিডিও ডিস্ক্রিপশনে দিতে; তবে অতিরিক্ত ট্যাগ না দেয়াটাই ভালো। এমন কোন ট্যাগ ব্যাবহার করবেন না যেটা ভিডিও রিলেটেট নয়। এমনটা করলে দেখা যায় ভিডিও ইম্প্রেশন হবে কিন্তু কেউ ক্লিক করবে না। ভিডিও ভাইরাল এর প্রধান বিষয়ই হলো ইম্প্রেশন ক্লিক। আপনার ভিডিও ইম্প্রেশন ক্লিক যদি ৫ থেকে ১০ এর মধ্যে থাকে এবং মোটামুটি এই ভিডিওতে কমেন্ট আসে তাহলে আপনার ভিডিও ভাইরাল হতে বাধ্য। নিজে বার বার ভিডিও ভিউ করবেন না, লক্ষ্য রাখবে অন্য কেউ ও যেনো বার বার ভিডিও ভিউ না করে। যদি কেউ ভিডিও ভিউ করে তাহলে যেনো কিছু সময় ধরে আপনার ভিডিওটা সে দেখে। ভিডিও ভাইরাল এর ২য় প্রধান বিষয় হলো ওয়াচটাইম। এবং এরপরে হলো কমেন্ট, ট্যাগ, টাইটেল ইত্যাদি। আর ভিডিও থামনেইল এর ব্যাপারটা আশাবাদী সবাই বুঝেন তাই সেটা নিয়ে আর কথা বাড়াতে চাই না।

নতুন যারা মনিটাইজ নিয়েও ইনকাম পাচ্ছেন না তাদেরকেও বলবো একই বিষয় ফলো করার জন্য। আপনারা কন্টেন্ট তৈরিতে মনোযোগ দিন। এডসেন্স কিংবা ট্যাগ টাইটেল নিয়ে ভাবুন পরে। প্রথমত আপনার ভিডিও ভাইরাল করুন। ভিডিও ভাইরাল হলে পরে আপনার আর্নিং এমনিতেই বাড়বে, এড ব্লক, পেজ সিটিআর এবং সিপিসি নিয়ে আপনার না ভাবলেও হবে।

মাঝে মাঝে একটি বিষয় লক্ষ্য করি, অনেকেই টাকা দিয়ে বা এই জাতীয় কিছু পদক্ষেপ নিয়ে ইউটিউব এর পার্টনার প্রোগ্রামের টার্গেট মোটামুটি পূর্ণ করে মনিটাইজ এর এপলাই করে ফেলেন আবার অনেকে মনিটাইজ পেয়ে যায়। কিন্তু একটা বিষয় লক্ষ্য করুন আপনারা এই অবৈধভাবে তাদের টার্গেট পূর্ণ করলেন কিন্তু আপনার ভিডিওর মান ভালো হলো না। আবার আপনি এর নিম্ন মানের ভিডিও বুষ্ট করেও মনিটাইজ পেয়ে গেলেন কিন্তু যখন মনিটাইজ পেয়ে যাবেন তখন কি করবেন? সারাজীবন কি আপনাকে আপনার বন্ধুরা এভাবে নিজের খেয়ে নিজের খরচে পাশে থাকবে? পাশে থাকলেই কতোটা পাশে থাকতে পারিবে যদি আপনার ভিডিও ভাইরাল না হয়? অথবা আপনি সব সময় বুষ্ট পুষ্ট দিয়ে কতোটুকুই আর্নিং করতে পারবেন? যদি আপনার ভিডিও মানুষ না দেখে…? এটা করতে পারেন যদি আপনার অনেক বাজেট থাকে কিন্তু বিষয়টি এমন হবে যে আপনি খরচ করলেন ১০০ ডলার কিন্তু আপনার আর্নিং হবে ১০ ডলার। মাস শেষ দেখা যাবে আমের চেয়ে বস্তার দাম বেশি।

তাই বলে বুষ্ট পোস্ট বা বন্ধুদের থেকে সাহায্য নিবেন না বিষয়টি এমন নয়, অবশ্যই সব দিক থেকে হ্যাল্প নিতে পারেন তবে ব্যাপারটা এমন হতে হবে যেটা একটা ছোট কাহিনি বলে শেষ করছি। মাঝে মাঝে দেখবেন গাড়ির ব্যাটারি ডাউন থাকলে বা অনেকদিন গাড়ি পড়ে থাকলে সেই গাড়ির ব্যাটারি ডাউন হয়ে যায়। তখন মানুষ ধাক্কা দিয়ে গাড়ি স্টার্ট করে। যদি সেই গাড়ির ইঞ্জিন ভালো থাকে তাহলে ধাক্কা দিয়ে গাড়ি স্টার্ট দেয়ার পর কিন্তু গাড়ি নিজেও চলে আবার ব্যাটারিও চার্জ পূর্ণ হয়ে ঠিক হয়ে যায়। আপনার একটা ভিডিও ঠিক তেমনি। যারা নতুন ইউটিউবার তাদের ভিডিও গুলো এই গাড়ির ন্যায়। ভিডিওর মান ভালো হলে আপনি বন্ধুদের হ্যাল্প নিতে পারেন অথবা দু একবার বুষ্ট করতে পারেন তবে খুব বেশি নয়। বাজেট না থাকলে বুষ্ট করার কোন দরকার নেই, বুষ্ট না করে চ্যানেল র‍্যাংক করাতে পারলে আরো অনেক ভালো। একটা ভিডিও ভাইরাল হলেই আপনার বাকী ভিডিও গুলো চার্জ এর মতো হয়ে যাবে। অনেক কিছু লিখার ইচ্ছা ছিল কিন্তু পোস্ট বড় হয়ে যাচ্ছে তাই বলতে পারলাম না তবে আশাবাদী কিছুটা হলেও বুঝাতে পেরেছি। যদি কোন ভুল হয়ে থাকে তাহলে ভুল ধরিয়ে দিবেন। পাশাপাশি অন্য কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন। আপনারা সাপোর্ট দিলে ধারাবাহিকতা নিয়ে ইউটিউব সিইও এবং ব্লগিং নিয়ে লিখার আগ্রহ হবে। ধন্যবাদ সবাইকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *