প্রায় ১২শ বছরের পুরোনো ইতিহাসের সাক্ষী ওয়াদ্দা দিঘী এবং উপজেলার সবচেয়ে বড় ঈদগাহ মাঠ।

খলিলুর কাদেরীঃ প্রায় ১২শ বছরের পুরোনো ইতিহাসের সাক্ষী ওয়াদ্দা দিঘী এবং উপজেলার সবচেয়ে বড় ঈদগাহ মাঠ।

অষ্টম শতাব্দীতে রাজা ইন্দ্রপাল ইন্দ্রপুর ও তার আশেপাশের এলাকা অর্থাৎ বর্তমান শ্রীপুর নিয়ে একটি স্বাধীন রাজ্য গঠন করেছিলেন তারপুত্র আতিদ্যপাল শ্রীপুর ৩ কিলোমিটার উত্তরে একটি সেনা ছাউনি ফেলে একটি বড় দিঘী খনন করেন। যা আদিত্যপালের দিঘি নামে পরিচিত ছিল। যার বর্তমান প্রচলিত নাম এই ওয়াদ্দার দিঘী। আর তৎপুত্র রাজা শ্রীপালের নাম অনুসারে শ্রীপুর নামকরণ করা হয়েছিল। সেই নাম অনুসরণ করেই শ্রীপুর উপজেলার নামকরণ করা হয়। যার শ্রী-অর্থ সৌর্ন্দয্য, পুর -অর্থ নগরী অর্থাৎ সৌন্দর্য্যের নগরী।

ইতিহাসবিদরা বলেন, এই রাজ্যের সৈন্যবাহিনীর পানির চাহিদা মেটাতে এ রাস্তার পাশে প্রায় ৩২ বিঘা জমির ওপর দিঘিটি খনন করা হয়। ধারণা করা হয়, দিঘিটি অষ্টম শতকের পরপরই খনন করা হয়েছিল। শিশুপালের পর তাঁর সর্বশেষ উত্তরাধিকার রানী ভবানী পাল এ অঞ্চলটি শাসন করেন।

এরপর চলে ফকির-দরবেশদের শাসনকাল। যারা ইসলাম প্রচারে এসে এই দিঘি ব্যবহার করেছেন। এরপরই দিল্লি থেকে ইসলাম প্রচারের জন্য আসেন পাহলোয়ান শাহ গাজী। যার বংশের নামানুসারেই আমাদের বর্তমান এই গাজীপুর জেলার নামকরণ। শাহ পাহলোয়ার গাজী দিল্লির বাদশাহ কতৃক নিযুক্ত হয়েছিলেন। এরপর শুরু হয় ইসলামী শাসনামল। পাহলোয়ান শাহ অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণ করতে থাকেন। তাঁর অনুসারী ও ধর্ম প্রচারকরা এই দিঘি ব্যবহার করেছেন।

এরপর ব্রিটিশ শাসনামলে দিঘিটি পত্তন নেন এক মুসলমান ব্যাক্তি। অতঃপর পত্তন নেওয়া মুসলমান ব্যক্তির নামানুসারেই এর নামকরণ হয় ‘ওয়াদ্দার দিঘি’

এই ওয়াদ্দা দিঘির পূর্বপাশে রয়েছে বিশাল বড় একটি মাঠ। বর্তমানে এই ওয়াদ্দা দিঘির এ বিশাল মাঠে শ্রীপুরের সর্ববৃহৎ ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এই ঈদের মাঠে একসাথে নামাজ পড়েন লাখো মানুষ। শ্রীপুর ছাড়াও আশেপাশের অনেক দূর থেকে মানুষ আসে এখানে নামাজ আদায় করার জন্য। এই ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছিল গত ২২ এপ্রিল ২০২৩ ইং এ পবিত্র ইদ-উল-ফিতরে দিন। যেখানে ঈমামতি করেছিলেন ভারত থেকে আগত সাহাবী হযরত আবু বকর রাঃ এর বংশধর, এছাড়াও নামাজ আদায় করেন শ্রীপুর উপজেলার সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র সহ আরো অনেক গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ। বর্তমানে তাদের নেতৃত্বেই আয়োজন করা হয় এই ইদগাহ মাঠের সকল আয়োজন।

অন্যদিকে এই দিঘির পশ্চিম পাড়ে রয়েছে ভূমিহীন অনেক পরিবারের বসবাস। তাদের দায়ীত্বে রয়েছে এই দিঘি। তাঁদের দেখাশোনার ফলে এখনো টলমল করে দিঘির পানি।

বর্তমানে প্রতিদিন বিকেলে  দূর দূরান্ত থেকে আগত পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয় এই ওয়াদ্দা দিঘি এবং এর পাশে গড়ে উঠেছে একটি রিসোর্ট ও কফিশপ। সরকারিভাবে ব্যাবস্থা নিলে দিঘিটি আকর্ষণীয় স্থানে পরিণত হবে।

কথা বলছিলাম আমি মোঃ খলিলুর রহমান, ভিডিওটি ভালো লাগলে একটি লাইক দিবেন এবং শেয়ার করবেন আপনার বন্ধুদের সাথে।

video

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *