নুহাশ পল্লী
গাজীপুর জেলার চৌরাস্তা থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরে পিরুজালী নামক গ্রামে প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের এই বাগানবাড়ী নুহাশ পল্লী অবস্থিত। বর্তমানে এটি শুটিংস্পট ও পারিবারিক বিনোদন কেন্দ্র।
এখানে নানা স্থাপনা আর অসংখ্য ফলজ, বনজ গাছের পাশাপাশি তিনি ঔষধি গাছের বাগান বানিয়েছিলেন। ছেলে নুহাশ হুমায়ূন এর নামে রাখা নুহাশ পল্লীকে হুমায়ূন আহমেদ মনের মতো করে নিজস্ব স্বপ্নজগত করে তোলেছিলেন। ঢাকায় তার বাসস্থান হলেও সুযোগ পেলেই নুহাশ পল্লীতে চলে আসতেন সময় কাটাতে। কখনো আসতেন সপরিবারে, কখনো আসতেন বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে রাতভর আড্ডা দিতে।
প্রতি বছর ১লা বৈশাখে নুহাশ পল্লীতে বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হতো। নুহাশ পল্লীতে হুমায়ূন আহমেদ স্যুটিং স্পট, দিঘি আর তিনটি সুদৃশ্য বাংলো গড়ে তুলেছেন। একটিতে তিনি থাকতেন আর বাকি দুটিতে তিনি তার শৈল্পিক চিন্তাধারার বিকাশ ঘটিয়েছিলেন। শানবাঁধানো ঘাটের দিঘির দিকে মুখ করে বানানো বাংলোকে তিনি ‘ভূত বিলাস’ নাম দিয়েছিলেন। দুর্লভ সব ঔষধি গাছ নিয়ে যে বাগান তৈরি করা হয়েছে তার পেছনেই রূপকথার মৎস্যকন্যা আর রাক্ষসের ভাস্কর্য রয়েছে। আরো রয়েছে পদ্মপুকুর ও অর্গানিক শৈলীতে নকশা করা এবড়োথেবড়ো সুইমিং পুল।
এখানে প্রবেশের পর মাঠ ধরে সামনে এগিয়ে হাতের বাঁ-পাশে শেফালি গাছের নীচে একটি নামাজের ঘর রয়েছে। এর পাশে তিনটি পুরনো লিচুগাছ নিয়ে একটি ছোট্ট বাগান রয়েছে। লিচু বাগানের উত্তর পাশে জাম বাগান আর দক্ষিণে আম বাগান। ওই লিচুগাছের নিচে হুমায়ূন আহমেদের সমাধি অবস্থিত। কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ ব্যক্তিগত উদ্যোগে এই নুহাশ পল্লী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুর চান্দনা চৌরাস্তা থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে হোতাপাড়া বাজার। সেখান থেকে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে পিরুজালী গ্রাম। ওই গ্রামেই ৪০ বিঘা জায়গা নিয়ে নুহাশ পল্লী তৈরি করেছিলেন প্রয়াত হুমায়ুন আহমেদ। এখানে জন সাধারণ ঢুকার অনুমতি রয়েছে তবে এর জন্য ২০০ টাকা দিয়ে টিকেট কাটতে হয়। ১০ বছর পর্যন্ত টিকেট ফ্রি।