কাপাসিয়ার রানীগঞ্জ

বাংলাদেশের গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার একটি ঐতিহাসিক স্থান রানীগঞ্জ। এটি শীতলক্ষ্যা ও পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের সঙ্গমস্থলের কাছে অবস্থিত। এই জনপদের রয়েছে ব্যপক ইতিহাস ও ঐতিহ্য।

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট

 * মসলিন শিল্প: কাপাসিয়া অঞ্চল একসময় বিখ্যাত মসলিন কাপড়ের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। এখানে উৎপাদিত কার্পাস তুলা দিয়ে এই সূক্ষ্ম বস্ত্র তৈরি হতো। রানীগঞ্জ ছিল সেই মসলিন উৎপাদন ও ব্যবসার অন্যতম কেন্দ্র।

 * দুর্গ ও জমিদারী: এই এলাকায় বেশ কিছু প্রাচীন দুর্গ ও জমিদারীর ধ্বংসাবশেষ দেখতে পাওয়া যায়। এর মধ্যে 'রানী বাড়ি' নামে পরিচিত একটি দুর্গ রয়েছে, যা কথিত আছে রানী ভবানীর সম্পত্তি ছিল। অনেকে মনে করেন এটিই ঐতিহাসিক একডালা দুর্গ।

 * ঈশা খাঁর স্মৃতি: বাংলার বারো ভূঁইয়াদের নেতা ঈশা খাঁ মুঘল সেনাপতি মানসিংহের বিরুদ্ধে এখানে সামরিক প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। রানীগঞ্জের কাছেই ছিল তাঁর দুর্গ এবং এই অঞ্চলের সাথে তাঁর জীবনের নানা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা জড়িত। এমনকি কথিত আছে, রানীগঞ্জের অপর পাড়ে তাঁর বিয়ে সম্পন্ন হয়েছিল।

 * মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস: ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধেও রানীগঞ্জ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই অঞ্চলে মুক্তিযোদ্ধা ও পাকিস্তানি বাহিনীর মধ্যে বেশ কিছু যুদ্ধ সংঘটিত হয়।

বর্তমান অবস্থা

বর্তমানে রানীগঞ্জ একটি জনপদ এবং এখানে একটি বাজার রয়েছে। এর ঐতিহাসিক গুরুত্বের পাশাপাশি এটি তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যও পরিচিত। শীতলক্ষ্যা ও ব্রহ্মপুত্র নদের সংযোগস্থলের মাঝে এখানে একটি ছোট সবুজ দ্বীপ রয়েছে, যা স্থানীয়ভাবে ধাঁধার চর নামে পরিচিত এবং একটি দর্শনীয় স্থান।

ব্রিটিশ শোষণের চিহ্ন মেখে দাঁড়িয়ে আছে গাজীপুরের নীলকুঠি। যা এই রানীগঞ্জ বাজার ও রানীগঞ্জ হাইস্কুলের উত্তর পাশের শীতলক্ষ্যা নদীর পশ্চিম তীরে অবস্থত।
Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url